Dhaka ১১:২৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম:
নির্বাচন ঘিরে ঐক্যের বার্তা: ইসলামী দলগুলোর জোটবদ্ধ আগ্রহ চরমোনাইয়ের মহাসমাবেশে বিএনপি কে ক্ষমতায় যাওয়ার গ্যারান্টি কে দিল? শায়েখে চরমোনাই নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনীতিবিদ, লেখক ও অনলাইন অ্যাকটিভিস্ট সাইমুম সাদী বলেছেন, “দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য সামনে রেখে যদি ঐক্য গড়ে ওঠে, তবে সেটি হবে টেকসই ও ফলপ্রসূ। শুধু নির্বাচন নয়, বরং জাতীয় পর্যায়ে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু সামনে রেখে একটি কার্যকর ও সুদূরপ্রসারী ঐক্যের প্রয়োজন রয়েছে।” তিনি মনে করেন, যেহেতু নির্বাচন এখন ঘনিয়ে এসেছে, তাই নির্বাচনকেন্দ্রিক ঐক্যকেও যথাযথ পরিকল্পনা ও কৌশলের মাধ্যমে অনেক দূর এগিয়ে নেওয়া সম্ভব। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ঐক্যের পথে প্রধান বাধা হচ্ছে পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাসের অভাব। অনেক সময় দেখা যায়, ঐক্যের সময় মুখে ভালো কথা বলা হলেও সুযোগ পেলে কেউ কাউকে বাদ দিয়ে এগিয়ে যেতে চায় কিংবা বিক্রি করে দেয়। এই সন্দেহ ও সংশয় দূর করতে না পারলে শুধু কথার ঐক্য দীর্ঘস্থায়ী হয় না।” সাইমুম সাদী পরামর্শ দিয়ে বলেন, “ঐক্যবদ্ধ হতে না পারলেও একে অপরের প্রতি আচরণে ভদ্রতা ও সৌজন্য থাকা উচিত। তা দলের প্রধান থেকে শুরু করে কর্মী পর্যন্ত সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। কর্মীদের ঐক্যের মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত করতে হবে।” তিনি আরও বলেন, “এই বিষয়ে একটি গবেষণা সেল গঠন করা যেতে পারে। যেখানে নিয়মিতভাবে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের পরামর্শ ও প্রস্তাবনা দেওয়া হবে। পরে বিভিন্ন দলের দায়িত্বশীলরা একত্রে বসে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবেন।” শেষে তিনি বলেন, “ঐক্যবদ্ধতা কোনো সাময়িক ব্যাপার নয়, এটি ধারাবাহিকভাবে কাজের বিষয়। নতুন নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। চালাকি করে তাৎক্ষণিক লাভ হলেও দীর্ঘমেয়াদে জনআস্থা হারাতে হয়। তাই সাময়িক ঐক্যকে স্থায়ী রূপ দেওয়ার প্রয়াস হোক আন্তরিকতা ও দূরদর্শিতার সঙ্গে। আল্লাহ আমাদের কামিয়াব করুন।” সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার জন্য সংশ্লিষ্টদের অভিনন্দন জানালেন প্রধান উপদেষ্টা নোয়াখালীতে হিযবুত তওহীদ এর কার্যক্রম বন্ধ ও “দেশের পত্র” পত্রিকা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত কুমিল্লায় “ঝাকুনিপাড়া বয়েজ ক্লাব”-এর আত্মপ্রকাশ কুরবানির যাবতীয় মাসায়েল এক রাতের বিজয়: মেহমেদ আল ফাতিহ বনাম আমাদের তরুণ প্রজন্ম” শিশুর সামনে আপনার প্রতিটি কথা—একটি শিক্ষা পড়াশুনাই হলো জীবনের অধিকাংশ ঝড়ের ঔষধ

ভাষা ও সাহিত্যচর্চা ইবাদত

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৩৯ Time View

মানুষ ও প্রাণিকুলের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য হলো বাক বা ভাষা। কোরআন কারিমের বর্ণনা, ‘দয়াময় রহমান আল্লাহ! কোরআন পাঠ শেখালেন; মানুষ সৃষ্টি করলেন। তাকে ভাষা বয়ান শেখালেন।’ (সুরা-৫৫ আর রাহমান, আয়াত: ১-৪)

শুদ্ধ ভাষা ও সুন্দর বর্ণনার প্রভাব অনস্বীকার্য। আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) ছিলেন ‘আফসাহুল আরব’ তথা আরবের শ্রেষ্ঠ বিশুদ্ধভাষী। বিশুদ্ধ মাতৃভাষায় কথা বলা নবীজি (সা.)–এর সুন্নত। আল্লাহ তাআলা কিতাব নাজিল করেছেন ও নবী–রাসুলদের পাঠিয়েছেন তাঁদের স্বজাতির ভাষায়। কোরআন মাজিদে এসেছে, ‘আমি প্রত্যেক রাসুলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি তাদের নিকট পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য।’ (সুরা-১৪ ইব্রাহিম, আয়াত: ৪)

মহাগ্রন্থ আল–কোরআন আরবি ভাষায় নাজিল করার কারণ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ইহা আমি অবতীর্ণ করেছি আরবি ভাষায় কোরআন, যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পারো।’ (সুরা-১২ ইউসুফ, আয়াত: ২)

হজরত মুসা (আ.)–কে নবী ও রাসুল হিসেবে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করলে তিনি বললেন, ‘“আমার ভাই হারুন আমার চেয়ে বাগ্মী। অতএব তাকে আমার সাহায্যকারী রূপে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সাহায্য করবে। আমি আশঙ্কা করি, তারা আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে।” আল্লাহ বললেন, “আমি তোমার ভাইয়ের দ্বারা তোমার হাত শক্তিশালী করব এবং তোমাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করব। তারা তোমাদের নিকট পৌঁছাতে পারবে না, তোমরা ও তোমাদের অনুসারীরা আমার নিদর্শনবলে তাদের ওপর প্রবল হবে।”’ (সুরা-২৮ কাসাস, আয়াত: ৩৪-৩৫)

নবী কারিম (সা.) মদিনা মুনাওয়ারায় বদর যুদ্ধের বন্দীদের মধ্যে যাঁরা লেখাপড়া জানা শিক্ষিত, তাঁদের মুক্তিপণের বিনিময়ে অর্থসম্পদ না নিয়ে এর পরিবর্তে তাঁদের মুসলিম শিশুদের লেখাপড়া ও ভাষাশিক্ষার শিক্ষকরূপে নিয়োজিত করেছিলেন এবং ১০ সাহাবি সন্তানকে ভাষাশিক্ষাদানের বিনিময়ে তাঁদের একেকজনকে মুক্তি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সাহাবিকে বিভিন্ন বিদেশি ভাষা শিখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর যাঁরা বিভিন্ন ভাষা জানেন, তাঁদের প্রশংসা করেছিলেন।

ভাষা হলো ভাব প্রকাশের মাধ্যম। ভাষার অলংকৃত রূপ হলো সাহিত্য। সাহিত্যের বিশেষায়িত পর্ব হলো কাব্য। যিনি কাব্য করেন, তিনি হলেন ‘কবি’। মুসলমানদের হাতেই রচিত হয় আরবি ভাষার ব্যাকরণ। অনারবদের কোরআন পড়তে সমস্যা হতো বিধায় হজরত আলী (রা.) তাঁর প্রিয় শিষ্য হজরত আবুল আসওয়াদ দুওয়াইলি (রহ.)–কে নির্দেশনা দিয়ে আরবি ভাষাশাস্ত্র প্রণয়ন করান, যা ‘ইলমে নাহু’ ও ‘ইলমে ছরফ’ নামে পরিচিত। পরবর্তী সময়ে উচ্চতর ভাষাতত্ত্ব ‘ইলমে বায়ান’, ‘ইলমে মাআনি’ ও ‘ইলমে বাদি’র উন্মেষ ঘটে।

আল্লাহ তাআলা কোরআন কারিমে বলেন, ‘হে নবী (সা.)! আমি আপনার প্রতি সর্বসুন্দর কাহিনি বর্ণনা করেছি।’ (সুরা-১২ ইউসুফ, আয়াত: ২) প্রিয় নবীজি (সা.) নিজে কাব্য করতেন। বিখ্যাত সাহাবি হজরত হাসসান বিন সাবিত (রা.) কাব্য রচনা করতেন। হজরত আয়িশা (রা.) কাব্যচর্চা করতেন। এভাবে ইসলামের সব যুগেই বিভিন্ন ভাষায় সাহিত্যচর্চা চলে আসছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির)

কোরআনের প্রথম অবতীর্ণ আয়াতের শুরুতে আল্লাহ তাআলা বলেন ‘ইকরা’ মানে পড়ো। (সুরা-৯৬ আলাক, আয়াত: ১) কিয়ামতের দিনে হাশরের ময়দানে বিচার দিবসে আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তুমি তোমার কিতাব (আমলনামা) পাঠ করো, আজ তোমার হিসাবের জন্য তুমিই যথেষ্ট।’ (সুরা-১৭ বনি ইসরাইল, আয়াত: ১৪)

Tag :
About Author Information

নির্বাচন ঘিরে ঐক্যের বার্তা: ইসলামী দলগুলোর জোটবদ্ধ আগ্রহ চরমোনাইয়ের মহাসমাবেশে

ভাষা ও সাহিত্যচর্চা ইবাদত

Update Time : ০৫:৪৯:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মানুষ ও প্রাণিকুলের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য হলো বাক বা ভাষা। কোরআন কারিমের বর্ণনা, ‘দয়াময় রহমান আল্লাহ! কোরআন পাঠ শেখালেন; মানুষ সৃষ্টি করলেন। তাকে ভাষা বয়ান শেখালেন।’ (সুরা-৫৫ আর রাহমান, আয়াত: ১-৪)

শুদ্ধ ভাষা ও সুন্দর বর্ণনার প্রভাব অনস্বীকার্য। আমাদের প্রিয় নবীজি (সা.) ছিলেন ‘আফসাহুল আরব’ তথা আরবের শ্রেষ্ঠ বিশুদ্ধভাষী। বিশুদ্ধ মাতৃভাষায় কথা বলা নবীজি (সা.)–এর সুন্নত। আল্লাহ তাআলা কিতাব নাজিল করেছেন ও নবী–রাসুলদের পাঠিয়েছেন তাঁদের স্বজাতির ভাষায়। কোরআন মাজিদে এসেছে, ‘আমি প্রত্যেক রাসুলকেই তার স্বজাতির ভাষাভাষী করে পাঠিয়েছি তাদের নিকট পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করার জন্য।’ (সুরা-১৪ ইব্রাহিম, আয়াত: ৪)

মহাগ্রন্থ আল–কোরআন আরবি ভাষায় নাজিল করার কারণ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘ইহা আমি অবতীর্ণ করেছি আরবি ভাষায় কোরআন, যাতে তোমরা অনুধাবন করতে পারো।’ (সুরা-১২ ইউসুফ, আয়াত: ২)

হজরত মুসা (আ.)–কে নবী ও রাসুল হিসেবে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করলে তিনি বললেন, ‘“আমার ভাই হারুন আমার চেয়ে বাগ্মী। অতএব তাকে আমার সাহায্যকারী রূপে প্রেরণ করুন, সে আমাকে সাহায্য করবে। আমি আশঙ্কা করি, তারা আমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করবে।” আল্লাহ বললেন, “আমি তোমার ভাইয়ের দ্বারা তোমার হাত শক্তিশালী করব এবং তোমাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করব। তারা তোমাদের নিকট পৌঁছাতে পারবে না, তোমরা ও তোমাদের অনুসারীরা আমার নিদর্শনবলে তাদের ওপর প্রবল হবে।”’ (সুরা-২৮ কাসাস, আয়াত: ৩৪-৩৫)

নবী কারিম (সা.) মদিনা মুনাওয়ারায় বদর যুদ্ধের বন্দীদের মধ্যে যাঁরা লেখাপড়া জানা শিক্ষিত, তাঁদের মুক্তিপণের বিনিময়ে অর্থসম্পদ না নিয়ে এর পরিবর্তে তাঁদের মুসলিম শিশুদের লেখাপড়া ও ভাষাশিক্ষার শিক্ষকরূপে নিয়োজিত করেছিলেন এবং ১০ সাহাবি সন্তানকে ভাষাশিক্ষাদানের বিনিময়ে তাঁদের একেকজনকে মুক্তি দিয়েছিলেন। এ ছাড়া রাসুলুল্লাহ (সা.) বিভিন্ন সাহাবিকে বিভিন্ন বিদেশি ভাষা শিখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আর যাঁরা বিভিন্ন ভাষা জানেন, তাঁদের প্রশংসা করেছিলেন।

ভাষা হলো ভাব প্রকাশের মাধ্যম। ভাষার অলংকৃত রূপ হলো সাহিত্য। সাহিত্যের বিশেষায়িত পর্ব হলো কাব্য। যিনি কাব্য করেন, তিনি হলেন ‘কবি’। মুসলমানদের হাতেই রচিত হয় আরবি ভাষার ব্যাকরণ। অনারবদের কোরআন পড়তে সমস্যা হতো বিধায় হজরত আলী (রা.) তাঁর প্রিয় শিষ্য হজরত আবুল আসওয়াদ দুওয়াইলি (রহ.)–কে নির্দেশনা দিয়ে আরবি ভাষাশাস্ত্র প্রণয়ন করান, যা ‘ইলমে নাহু’ ও ‘ইলমে ছরফ’ নামে পরিচিত। পরবর্তী সময়ে উচ্চতর ভাষাতত্ত্ব ‘ইলমে বায়ান’, ‘ইলমে মাআনি’ ও ‘ইলমে বাদি’র উন্মেষ ঘটে।

আল্লাহ তাআলা কোরআন কারিমে বলেন, ‘হে নবী (সা.)! আমি আপনার প্রতি সর্বসুন্দর কাহিনি বর্ণনা করেছি।’ (সুরা-১২ ইউসুফ, আয়াত: ২) প্রিয় নবীজি (সা.) নিজে কাব্য করতেন। বিখ্যাত সাহাবি হজরত হাসসান বিন সাবিত (রা.) কাব্য রচনা করতেন। হজরত আয়িশা (রা.) কাব্যচর্চা করতেন। এভাবে ইসলামের সব যুগেই বিভিন্ন ভাষায় সাহিত্যচর্চা চলে আসছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির)

কোরআনের প্রথম অবতীর্ণ আয়াতের শুরুতে আল্লাহ তাআলা বলেন ‘ইকরা’ মানে পড়ো। (সুরা-৯৬ আলাক, আয়াত: ১) কিয়ামতের দিনে হাশরের ময়দানে বিচার দিবসে আল্লাহ তাআলা বলবেন, ‘তুমি তোমার কিতাব (আমলনামা) পাঠ করো, আজ তোমার হিসাবের জন্য তুমিই যথেষ্ট।’ (সুরা-১৭ বনি ইসরাইল, আয়াত: ১৪)