📅 ৩১ মে, ২০২৫ নিজস্ব প্রতিবেদক
দীর্ঘদিনের সংকট পেরিয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে সিরিয়া। এবার দেশটির বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সাতশ কোটি ডলারের এক বিশাল বিনিয়োগের চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা এই খাতে দেশটির জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিচ্ছে।
বুধবার (২৮ মে) দামেস্কের প্রেসিডেনশিয়াল প্রাসাদে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সিরিয়ার জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাত পুনর্গঠনের লক্ষ্যে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এতে অংশ নেয় তুরস্কের ক্যালিয়ন হোল্ডিং ও জেঙ্গিজ হোল্ডিং, কাতারের ইউসিসি কনসেশন ইনভেস্টমেন্টস এবং যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পাওয়ার ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি। এ চার প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে একটি কনসোর্টিয়াম গঠনের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
পাঁচ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য
চুক্তি অনুযায়ী সিরিয়ার ত্রাইফাওয়ি, যায়জুন, দেইর আজ-জোর ও মাহারদেহ এলাকায় গ্যাসভিত্তিক চারটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং ওয়েদিয়ান আলরাবি এলাকায় একটি সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মিত হবে। মোট উৎপাদন ক্ষমতা হবে ৫,০০০ মেগাওয়াট। গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্রগুলো তিন বছরের মধ্যে এবং সৌর কেন্দ্রটি দুই বছরের মধ্যে চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। চালু হলে প্রতি বছর প্রায় ৩৫,০০০ কোটি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে।
আঞ্চলিক সহযোগিতার নতুন অধ্যায়
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সিরিয়ার জ্বালানি ও বিদ্যুৎমন্ত্রী মুহাম্মাদ বাশীর বলেন, “এই মুহূর্তটি সিরিয়ার জন্য একটি ঐতিহাসিক সময়। ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামোকে আমরা আবার গড়ে তুলছি। এটি শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন নয়, বরং আঞ্চলিক সহযোগিতারও প্রতীক।”
যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়াবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি টম ব্যারাক বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার সঙ্গে সহযোগিতার নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করেছে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সাহসী সিদ্ধান্ত সিরিয়ার জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।”
বিনিয়োগকারীদের আশাবাদ
তুরস্কের ক্যালিয়ন হোল্ডিং-এর চেয়ারম্যান জামাল ক্যালিয়নচু বলেন, “আমরা সিরিয়ার জ্বালানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে চাই। আমাদের প্রযুক্তি, অভিজ্ঞতা ও ব্যবস্থাপনা দক্ষতা দিয়ে এই প্রকল্পকে সফল করে তুলব। আমরা বিশ্বাস করি, এই উদ্যোগ শুধু সিরিয়ার নয়, বরং পুরো অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে সহায়ক হবে।”
তিনি জানান, তুরস্কে নবায়নযোগ্য শক্তি খাতে তাদের প্রচেষ্টা ইতোমধ্যেই প্রশংসিত হয়েছে। এবার সিরিয়ায়ও সফলতা অর্জনের আশা করছেন তিনি। ভবিষ্যতে বিমানবন্দরসহ আরও খাতে কাজ করার আগ্রহের কথাও জানান তিনি।
নতুন সিরিয়ার সম্ভাবনা
চুক্তি স্বাক্ষরের পর ক্যালিয়নচু বলেন, “এই প্রকল্প সিরিয়ায় আমাদের প্রথম কাজ। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার একটি বড় ধাপ। আমরা বিশ্বাস করি, সিরিয়ার ভবিষ্যৎ অত্যন্ত উজ্জ্বল।”
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ শারাআ’র আমন্ত্রণে কনসোর্টিয়ামের সদস্যরা আশাবাদী যে এই প্রকল্প শুধু শক্তি খাতেই নয়, দেশের সার্বিক পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি ও ইয়েনি শাফাক
প্রকাশকাল: মে ৩১, ২০২৫
আইডিয়াল টাইমস